ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫ , ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিল্প বন্ধ হলে অর্থনীতিতে আঘাত

বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় : ১২-০৯-২০২৪ ০২:৩৭:৫২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১২-০৯-২০২৪ ০২:৩৭:৫২ অপরাহ্ন
শিল্প বন্ধ হলে অর্থনীতিতে আঘাত ফাইল ছবি
তিন মাসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার, ছয় কমিশন গঠন, পাচার টাকা ফেরাবে সরকার, আইন হাতে তুলে নিলে শাস্তি, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে ক্ষমতা কুক্ষিগত নয়, দাবি পূরণ হবে কর্মসূচি দিয়ে ব্যাঘাত নয়, কালো আইন বাতিল ও মিডিয়া কমিশন হবে, প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে

জাতির উদ্দেশে দেওয়া দ্বিতীয় ভাষণে সংস্কারের রূপরেখা দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেওয়া ভাষণে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে তিনি নির্বাচন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছেন।

এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পর, পরবর্তীতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন ব্যবস্থার মাধ্যমে যাতে কোনো রাজনৈতিক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতে না পারে; এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত না থাকে- সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধান এবং নির্বাচন কমিশনেও সংস্কার আনার কথা উল্লেখ করেছেন।

এই সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছেন, যার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে। এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সরফরাজ চৌধুরী, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন।

এই কমিশনগুলো এক অক্টোবর থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ আগামী পয়লা অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি এবং এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আমরা ধারণা করছি। কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শসভার আয়োজন করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে। এই আয়োজন জুলাই গণ অভ্যুত্থানের বার্তা বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্র পুনর্নির্মাণ তাগিদের ঐক্যবন্ধনে গোটা জাতিকে শক্তিশালী ও আশাবাদী করে তুলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রায় চল্লিশ মিনিটব্যাপী তাঁর এই ভাষণ জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা শুরুতে দেশের শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, বয়স্ক, বৃদ্ধ, পুরুষ, মহিলা সবাইকে সালাম জানান। বক্তব্যের শুরুতে তিনি জুলাই-আগস্ট মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া আন্দোলনে অংশ নেওয়া সবার কথা স্মরণ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার সামগ্রিক ভাষণে তিনি জনসাধারণকে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট না করার বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। আইন অমান্য করলে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে একটি মিডিয়া কমিশন গঠনের কথা বলেছেন। সাইবার নিরাপত্তাসহ বাংলাদেশে বিদ্যমান সব কালো আইন সংশোধন ও বাতিলের কথা বলেছেন। সাগর-রুনি হত্যাকান্ডসহ আলোচিত হত্যাকান্ডের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কারখানা খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে শ্রমিক-মালিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করার কথা বলেছেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে রাজপথে আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ